ছুটির দিনগুলা: ; কিছু পাতা অধ্যয় ৮

ছুটির দিনগুলা:

আমার পরীক্ষার প্রিপারেশন খুব ভাল ছিল কিন্তু আমি পরীক্ষার আগে কেমন যেন পড়তে পারতাম না শুধুমাত্র এই বিচ্ছেদের ভয়ে, পরীক্ষার পর নিজেকে এতটা হালকা মনে হচ্ছে যে তা বলে বুঝানো সম্ভব না।

পরীক্ষার পর একটা মাস পার হয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিনি প্রিয়ার সাথে মোবাইলে কথা হয় তবে প্রিয়ার মোবাইলটা থাকলে আরও বেশী ভাল হত। কিন্তু শ্বশুর আব্বার মোবাইলটা মরে গেছে বলে প্রিয়ার মোবাইলটা দখল করেছে, আর প্রিয়ারা সবাই দেশের বাড়িতে বেড়াতে গেছে। তাই ওর আম্মু ঝড়ৎৎু আমার শ্বাশুড়ীর কাছে চযড়হব করে প্রিয়াকে চাইতে হয় তাই একটু হিসাব করে কথা বলতে হয। আর আমি ভার্সিটি কোচিং নিয়েই সারাদিন পার করে দিচ্ছি।

তবে আমার আর আগের মত হাসা হয় না। অনেক মজার ব্যাপারগুলোও আমাকে তেমন কোন আনন্দ দেয় না আবার ছোট ছোট দু:খেই আমি কেঁদে ফেলি। মনটা কেমন যেন মরে গেছে। সময় চধংং করার জন্য ভার্সিটি কোচিং করি ইঁঃ যেদিন আমার অতীতটা মনে পরে যায় সেদিন আর আমার সামনে যেতে ইচ্ছে করে না, শুধুই পিছনে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে।
তারপরও এই ভেবে দিনগুলা পার করছি যে, আর মাত্র দু’মাস তারপর আবার সেই আগের মত দু’জন দিন কাটাব। মনে হয় আরও বেশী মজা হবে।
দেখতে দেখতে আরও ১৫টা দিন পার হয়ে গেল কিন্তু আরও দুইমাস অর্থাৎ অর্ধেক পথের চেয়ে বেশি বাকি আছে। আর সময় কাটেনা, আর ভাল লাগেনা। ভাবলাম ঢাকার বাইরে কোথায় যাব, কিন্তু কোচিং এর কি হবে? সময়তো আমার আর কাটেনা । প্রতিটি মূহুর্ত যে কয়েকটা বছরের সমান, পড়াতেও তেমন মন বসে না খালি প্রিয়ার কথা ভাবি। কখন ফোন করব, কি কথা বলব, হাজার কথা বলার পর ফোনটা কাটলে আরও শত হাজার কথা মনের ঘরে চলে আসে। মনে হয় আবার ফোন করি, কিন্তু আবার নিজেকে আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসি।

একদিন আব্বুকে বললাম “ আমি কক্সবাজার যেতে চাই, সব বন্ধুরা বেড়াতে গেছে, শুধু আমিই ঢাকায় পচে মরছি।” তখন আব্বু বলে“ একা যাবি”?
আমি: হ্যাঁ কেন?
আব্বু: না এমনি, কবে যাবি?
আমি: কালকে
আব্বু: কেন ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া লাগবে না?
আমি: হ্যাঁ লাগবে, কিন্তু ভার্সিটিতে ভর্তির এখনও দেরি আছে।
আব্বু: কোচিং কে করবে?
আমি: কোচিং লাগবে না আমার।
আব্বু: তাহলে বাসায় বসে থাক।
আর কি বলব চুপচাপ চলে এলাম নিজের ঘরে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকলাম হারানো দিনগুলার কথা, ভাবছি প্রিয়া কোথায় তুমি? প্রিয়াও হয়তো বা আমার কথা ভেবে ভেবে কাঁদছে, আবার ভাবি না প্রিয়াতো রাত দশটার পর আর জাগতে পারে না, সম্ভবত ঘুমিয়ে গেছে। …… ভাবতে ভাবতে অনেক রাত হয়ে গেল।

রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছি প্রিয়ার কথা। দরজায় কলিং বেল বেজে উঠল এত রাতে আবার কে এল? যার ইচ্ছা সে আসছে আমার কি, হঠাৎ কে যেন আমার ঘরে ঢুকল? আমি বললাম; কে? আরে প্রিয়া! তুমি এত রাতে। কেমন আছ তুমি?
মাথা নেরে উত্তর দিলো ভাল আছি।
আমি স্বপ্ন দেখছি না তো? নাহ্ সত্যিইতো।
আমি: তুমি কিভাবে এলে?
প্রিয়া কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে আমাকে দেখছে, এমনভাবে দেখছে যেন আমার কিছু একটা হয়েছে,…………
আমি: কি ব্যাপার কি হয়েছে তোমার?
প্রিয়া আমার পাশে এসে বসল,
আমি আবার বললাম তোমার কি হয়েছে প্রিয়া? কিছু তো একটা বল। এবার প্রিয়া আমার আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে, আমাকে বলল তোমার ঘুম আসছে না, আমার পায়ে মাথা রাখ, আমি ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি।

আমি প্রিয়ার পায়ে মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি জানতাম প্রিয়া, আমাকে ছেড়ে তুমি থাকতে পারবে না,……….
বলতে বলতে আমার চোখে পানি চলে আসল। প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি প্রিয়াও কাঁদছে প্রিয়ার চোখের জ্বল বেয়ে বেয়ে আমার চোখে এসে পড়ল। আমি চোখ বন্ধ করলাম, আবার চোখ খুললাম। জ্বানালা দিয়ে চাঁদকে দেখা যাচ্ছে, চাঁদ সুন্দরীকে দেখতে দেখতে আমি প্রিয়ার কোলে ঘুমের জগতে চলে গেলাম। শান্তি এখানে নেই কোন অশান্তি। নেই কোন দু:খ। শুধুই সুখ আর সুখ।

হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গল। চোখ খুলে প্রথমেই সূর্যকে দেখতে পেলাম। নিজেকে আবিস্কার করলাম বিছানার এক পার্শ্বে। চমকে উঠলাম। প্রিয়া কোথায় গেল? …. না, মনে হয় অন্য ঘরে গেছে…

আমি তাড়াহুড়া করে উঠে রান্না ঘর, কম্পিউটার রুম, ড্রইংরুম, এমনকি বাথরুমেও খুজলাম কিন্তু পেলাম না। প্রিয়াকে পেলাম না, ও কি আমাকে না বলে চলে গেলো? কিন্তু, কেন?

আম্মু এসে জিজ্ঞাসা করলো: কিছু লাগবে না কি, কি খুজছিস?
আমি: ও কোথায় আম্মু?
আম্মু: কে?
আমি: না রাতে না কে যেন আসল ?
আম্মু: কই? কেউ আসেনি ত?
আমি: আব্বু কোথায়?
আম্মু: অফিসে গেছে, কয়টা বাজে ঘড়ি দেখেছিস?
আমি ঘড়িতে দেখি দশটা পঁচিশ।

তার মানে সব মিথ্যা, না এ কিভাবে সম্ভব? আমি তো স্পষ্ট দেখলাম, এটা কি স্বপ্ন ছিল? অসম্ভব স্বপ্ন হতেই পারে না। তবে কেউ দেখল না, প্রিয়া এসে আবার চলেও গেল, আমার মাথাটাই কি খারাপ হয়ে গেল, নাকি স্বপ্ন দেখলাম। মন কে অনেক কষ্টে বুঝালাম যে এটা একটা সত্য স্বপ্ন ছিলো এর বেশী কিছুই না। ভাবলাম ইস! স্বপ্নটা যদি সত্যি হত, সত্যিই যদি প্রিয়া একদিন সেই চাঁদের রাতে এসে ধরা দিত। এ রকম স্বপ্ন মাঝে মধ্যেই আমি দেখি কিন্তু আমার প্রতিটা স্বপ্নই কেন যেন সত্যি মনে হয়।

আমার আর ভাল লাগে না, কি করি, সময়ও পার হয় না, ঘড়ি যেন আর চলছে না, ঘড়ি থেমে গেছে, ঘড়ি তো চলছে চলার মত কিন্তু আমার জীবনের চাকাই কেমন যেন আটকে গেছে। আর সহ্য হচ্ছে না দু:খে ঢাকা এই সুখের শহর, তাই বার বার ইচ্ছা করে দূরে কোন স্বপ্নের দেশে হারিয়ে যেতে। দেখতে দেখতে জবংঁষঃ এর আর মাত্র বিশ-তিরিশ দিন বাকি। এবার আমাকে দূরে যেতেই হবে (দশ দিন পর)। এক প্রকার আব্বু-আম্মুর অমতেই কক্সবাজার যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু কোন সাথী মেলেনি তাই আমাকে একাই যেতে হবে। নাইটের বাসের টিকিটও কেটে ফিরলাম। এখন শুধুই সময়ের ব্যবধান আমার আর কক্সবাজারের মাঝে। মনে মনে সব কিছু সাজিয়ে নিলাম। রেজাল্ট দেওয়ার দু’দিন কিংবা তিনদিন আগেই ফিরে আসব, আর কক্সবাজারে ১৫-২০ দিন থাকবো।
রাত ১২টার বাসে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে কলাবাগান বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠলাম। বিমানের মতই সিটগুলি। ঘুমে চোখ আর খুলা রাখতে পারলাম না। ঢাকা পার না হতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
মাঝ রাতে একবার একটা হোটেলে বাস থামল, আমি ঐখানে নেমে খাওয়া-দাওয়া করে আবার বাসে ফিরে গেলাম। তারপর আবার ঘুম, একদম এক ঘুমে সকালে উঠলাম। সকালে চোখ খুলে দেখি, আমি কক্সবাজার শহরে। একটা আবাসিক হোটেলে উঠলাম, শরীরটা খুব খারাপ লাগছে তাই বিছানায় শুয়ে পরলাম কিছুক্ষনের মধ্যেই গভীর ঘুমের মধ্যে ডুবে গেলাম।
মোবাইল বাজছে, মোবাইলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল চোখ খুলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তারপরও অনেক কষ্টে চোখ খুলে মোবাইলটা জবপবরাব করলাম,
আমি: হ্যাঁলো কে?
উত্তরে বলল: কি রে মেহেদী ভাল আছিস?
আমি: আম্মু
: সব ঠিক আছে বাবা?
: আম্মু সব ঠিক আছে। আমি ঘুমাচ্ছি। একটু পরে ফোন করি প্লিজ।
বলে কেটে দিলাম আবার ঘুমাতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু মনে হয় না আর ঘুম আসবে, যাহ সুখের ঘুমটা মাটি হয়ে গেল, বিছানা থেকে উঠে মুখ হাত ধুয়ে আবার ঘরে ফিরে এলাম। খুব ক্ষিদা লাগছে। ঘড়িতে তাকায়ে দেখি বিকাল পাঁচটা দশ বাজে। দুপুরে কিছুই খাওয়া হয়নি সকালেও তেমন কিছু খাইনি। তাড়াতাড়ি করে হোটেলে গিয়ে ভাত খেলাম, সাথে চান্দা মাছের তরকারি। যদিও আমি মাছ মোটেও ভালবাসি না। তবে কক্সবাজারে প্রায় প্রতিটি হোটেলেই চাদা মাছ প্রধান তরকারি, বিভিন্ন ধরনের চান্দা মাছের তরকারি পাওয়া যায়।

খাওয়া-দাওয়া করে হোটেলে ফিরে এলাম। মাগরিবের নামাজ পড়ে নিলাম ভাবলাম প্রিয়াকে একটা কল করা দরকার। প্রিয়ার সাথে তিনদিন ধরে কথা হয় না। বেচারী প্রিয়া কেমন আছে কে জানে? একবুক ভরা সাহস নিয়ে ফোন করলাম শ্বশুর আব্বার নাম্বারে কারণ শ্বশুর আব্বা আমার স্ত্রীর মোবাইলটা দখল করছে।
ও পাশ থেকে: হ্যাঁলো কে?
: হ্যাঁলো। জ্বি, আমি মেহেদী।
: কাকে চাই?
: প্রিয়াকে একটু দেবেন আমি ওর….. এটুকু বলতেই ওপাশ থেকে উত্তর চলে আসল,
: ও আচ্ছা। আমি তো বাইরে বাসায় গেলে আমিই তোমাকে কল করব ঠিক আছে।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল আর ভাল লাগছে না। কি করি, কি করতে পারি? আমার ভিতরের ছোট হৃদয়টা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেছে। ভাবলাম আম্মুকে ফোন করি। হ্যাঁলো আম্মু…….

রাত ১:৩০ মিনিট আমি হোটেলের ছাদে বসে আছি। হোটেলটা খুব বেশী সুন্দর না হলেও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য সবদিক দিয়ে চবৎভবপঃ. হোটেলের ছাদটা আমাদের বাসার ছাদের মতই, তেমন কোন পার্থক্য নেই তবে এ আকাশটার সাথে আমাদের ঢাকার আকাশের কোন মিল নেই। ঢাকার আকাশে চাঁদ খুজে বের করাই কষ্ট আর এই আকাশটা যেন লক্ষ তারারি তৈরী। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে আজ আমার আর ঘুম হচ্ছে না, ভাবছি প্রিয়া যদি এই মূহুর্তে ফোন করে তাহলে তারার সাথে চাঁদও পেয়ে যেতাম।

সকালে উঠেই প্রথমে মুখ-হাত ধুয়ে অযু করে ফজরের নামাজটা পড়ে নিলাম। ৭:৩০ মিনিটে ব্রেকফাস্ট করে বীচ এ চলে গেলাম। ভাবলাম প্রিয়াকে একটা কল করব কিন্তু ঘবঃড়িৎশ পাচ্ছি না। রিক্সা নিয়ে সমুদ্রের কাছাকাছি চলে এলাম বাকি পথ হেটে যেতে হবে। কিছুক্ষণ হাটার পর এক বিশাল পানির পাহাড়, দেখে বিশ্বাস করতে পারছি না, সমুদ্রের পাড় থেকে মনে হচ্ছে এখানে পানি ভূমি থেকে অনেক উপরে। পানির বড় বড় ঢেউগুলো যখন এদিকে আসতে থাকে দেখে মনে হয় যেন সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে কিন্তু ধীরে ধীরে যখন ঢেউটা কাছে চলে আসে তখন বুঝা যায় যে ঢেউিটা ব্যর্থ তারপর আবার নতুন করে নতুন কিছু ঢেউ ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। এভাবে ঢেউগুলো প্রতিবার ব্যর্থ হচ্ছে তারপরও তারা আবার সেই ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। সত্যি কি যে অদ্ভুত এক সুন্দর দৃশ্য না দেখলে তা বলে বুঝান সম্ভব নয়।

বেশীর ভাগ মানুষ দল বেঁধে এসেছে, কেউ হয়তো পরিবারের সাথে আর নয়তো বিয়ের পর হানিমুনে এসেছে অথবা ব›ধুদের সাথে এক জোট বেঁধে ফুর্তি করছে। আর একমাত্র আমিই একা এসেছি, তাই নিজেকে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে একা মনে হচ্ছে।

রাতে হোটেলে ফিরে এলাম, মুখ হাত ধুয়ে বারান্দায় বসে প্রিয়ার কথা ভাবছি আর প্রিয়ার মোবাইলে কল দিচ্ছি কিন্তু ঘবঃড়িৎশ বিজি….. একবার…… দুবার…….তিনবার….. চারবার………….চল্লিশবার……….ষাটবার………শতবার।
কিন্তু আমিও যেন সমুদ্রের ঢেউ এর মত বার বার ব্যর্থ হচ্ছি। চেষ্টা করতে করতে শেষমেষ আমি সফল হলাম দীর্ঘ তিনটা দিন পর। হ্যাঁলো
: হ্যাঁলো। কে?
: প্রিয়া?
: হ্যাঁ।
: কেমন আছ তুমি?
: ভাল। তুমি কেমন আছ?
: ভাল।
: কোথায় তুমি? আমার তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।
: সত্যি, আমি তো ভেবেছি তুমি আমাকে ভুলেই গেছ।
: ফালতু কথা বলবে না।
: তাহলে তুমি আমাকে একবারও কল দিলে না কেন?
: আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমি পারিনি, তাছাড়া তুমি তো জানই আমার মোবাইলটা……
; থাক প্রিয়া এসব কথা,
: কেন আমার সাথে কথা বলতে ভাল লাগছে না?
: প্রিয়া তুমি যে কি বল, তুমি বেশী অভিমানী। প্লিজ প্রিয়া রাগ কর না।
: কেন নতুন কাউকে…
: শয়তান মাইয়া তোমারে পাইলে এইবার খবর আছে।
: কি? দেখা যাবে কে কার খবর করে? বলতে বলতে হঠাৎ লাইনটা কেটে গেল, অনেক চেষ্টা করেও “ বিদায় ভাল থেকো বন্ধু” কথাটা বলতে পারলাম না বারবার আমি ব্যর্থ হলাম।

আমার দিনগুলো অনেক ভালই যায়, সারাদিন ঘুরাফেরা, আর খাওয়ার সময় কোন হোটেলে বসে পেট ভরে খেয়ে নিই এইত। দেখতে দেখতে আরও তিনটা দিন পার হয়ে গেল প্রিয়ার সাথে এখন প্রায় কথা হয়। শ্বশুর আব্বা আমার প্রিয়ার মোবাইলটা শেষ-মেষ দিয়ে দিয়েছে।
কক্সবাজারে এসেছি প্রায় সাতদিন আগে কালকেই ঢাকায় চলে যাব। কিন্তু খুব খারাপ লাগছে। একটুও ভাল লাগছে না, মনে মনে ভাবলাম আবার আসবো। বাসের টিকিট কেটে নিলাম। সকাল ১০ টার টিকিট।
ভাবলাম কক্সবাজারের শেষ বিকালটায় আনন্দ করেনি, তাই শেষ বারের মত বীচে আবার গেলাম। অনেক মজা করে বীচে গোসল করলাম, বিশাল বিশাল ঢেউ এর মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম, সব দু:খ যেন ভুলে গিয়েছে নতুন সুখের ঢেউএ ভেসে গেলাম। আজ আমার কাছে আর ব্যর্থ হয়ে যাওয়া ঢেউগুলাকে ব্যর্থ মনে হচ্ছে না বরং মনে হচ্ছে প্রতিটি ঢেউই সার্থক, সফল।
প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে, এখন আর পানিতে থাকা যাবে না, তাই মনের অনিচ্ছা সত্বেও উঠতে হচ্ছে, সমুদ্রেকে বিদায় জানিয়ে চলে এলাম।
কিন্তু একটু পরেই আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, আমার ব্যাগ নাই, ব্যাগে আমার মোবাইল, মানি ব্যাগ, টিকিট, প্রায় মূল্যবান সবকিছুই ব্যাগে ছিলো, এদিক ঐদিক অনেক খুজলাম কিন্তু পেলাম না। আমি যেন পাগল হয়ে গেলাম, পাগলের মত ছুটাছুটি করতে শুরু করলাম।
মাগরিবের আজান দিচ্ছে রাস্তা-ঘাটে মানুষের সংখ্যাও কমতে শুরু করছে কারণ এখানে বেশীর ভাগ মানুষ ঞড়ঁৎরংঃ। সবাই হোটেলে ফিরে যাচ্ছে। কাউকে বুঝিয়ে বলতেও পারছি না, আবার ঢাকার মানুষ পেলেও তারা আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নিজেকে একা মনে হতে শুরু করল, কেন যেন মনে হচ্ছে আমি একা আজ বড় একা, আমার সব হারিয়ে যাচ্ছে।

 

 

.: কিছু পাতা । মেহেদী মেনাফা :.

একটি ভালবাসার গল্প

edited

“কিছু পাতা”উপন্যাসটি আমার জীবনের কিছু সত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে লেখা। এটাই আমার জীবনের প্রথম লেখা উপন্যাস, তাই ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।

(if you can’t read cause of Bangla text, you can try image format at this link http://www.black-iz.com/vinnokobor/kisupata.html) (Also you can download this book from this link @ http://www.black-iz.com/kp/kisupata.doc)

Muhammad Mehedi Menafa at facebook : www.facebook.com/muhammadmehedimenafa

 

Related posts